SuccessfulMan
Successful man 

আমরা আশরাফুল মাখলূকাত। সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে আমরা বিশ্ব জুড়ে রাজত্ব করি।আমরা সামাজিক জীব। সমাজ বদ্ধ হয়ে বসবাস করি। একে অপরের প্রয়োজনে কাজ করি। একে অপরকে সাহায্য সহযোগিতা করি। একে অপরের বিপদে এগিয়ে আসি। একি সমাজে বাস করার ফলে আমরা এসব করি। কিন্তু সমাজের সকল মানুষ সমান নয়। আপনি সবার বিপদের দিনে বন্ধুত্বের হাত বাড়ালে ও অনেকে আপনার বিপদে এগিয়ে আসে না। উল্টো আপনাকে বিপদে ফেলতে নানা ফাঁদ পাতে। আপনার অসহায়ত্বের সুযোগ নেয়।
আপনার সাথে যদি সবাই এমন করে তবে হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরুন। এবং আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আপনাকে তো আঙুল বাঁকাতে হবে। আঙুল বাঁকানো বলতে আদতে হাতের আঙুল বাঁকানো নয়!
আঙুল বাঁকানো বলতে টাইটেলে আমি কি বুঝিয়েছি এবং বাঁকালে ও কতটুকু বাঁকাবেন তা জানার জন্য কিন্তু আপনাকে পুরোটা পরতে হবে।   

নিজেকে ঠিক করুনঃ


সবাই আপনার সাথে খারাপ ব্যবহার করে আপনাকে কষ্ট দেয় নানা ভাবে। এমনকি বিপদের মুখে ও ফেলে চলে আসে। তাহলে ধৈর্য্য ধরুন এবং চিন্তা করুন। আপনার সাথে কেন সবাই এমন করে! আপনার কোনো চারিত্রিক দোষ আছে কিনা? আপনি ও তাদের কষ্ট দেন? বিপদে ফেলেন? আপনার আচরণে কি কারো সম্মান হানি হয়?
উপরের সব প্রশ্নের উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তবে শুধরে নিন নিজেকে এখনো সময় আছে। আপনি আরেকজনের সাথে খারাপ ব্যবহার করে তার থেকে ভালো ব্যবহার আশা করতে পারেন না। আপনি লোকের খারাপ করলে তারা আপনার ভালো করবে এমনটা ভাববেন না ভুলেও। কারণ পৃথিবীটা মুলতঃ গিভেন টেকেন নীতিতে চলে। আপনি নিজে আরেক জনের ক্ষতি করলে সে আপনার ভালো করবে এরকমটা আপনি কোন যুক্তিতে আশা করেন?! অারেকজন থেকে ভালো কিছু আশা করার প্রথম শর্ত হচ্ছে নিজে ভালো হওয়া।

যৌক্তিক বলুনঃ


অন্যের সহানুভূতি পাওয়ার দ্বিতীয় শর্ত হলো যৌক্তিক কথা বলা। আপনার সামনে যাই ঘটুক না কেন আপনি তাতে ঘাবড়ে গিয়ে মিথ্যে টা বলবেন না যেন। সত্য যেমন আপনার ব্যক্তিত্ব প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করে তেমনি আপনার সম্পর্কে অন্যের মনোভাব ও পাল্টে দেয়। অতএব যৌক্তিক বলুন এবং সত্যের পক্ষে থাকুন। তাহলেই আপনি লোকের কাছ থেকে সত্য ও সুন্দর আশা করতে পারেন।
সত্য বলার পর ও যদি আপনি বিপাকে পড়েন আপনার কথা কেউ তেমন গুরুত্ব না দেয়। তবে আপনার আওয়াজ তুলুন। আপনার বক্তব্যের যৌক্তিকতা এমন ভাবে উপস্থাপন করুন যাতে শ্রোতা আপনার কথা শুনতে ও আপনাকে পাত্তা দিতে বাধ্য হয়। মনে রাখবেন বাগ্মিতা এমন একটি গুণ যার দ্বারা শত্রুকে বিনা যুদ্ধে পরাজিত করা সম্ভব।

নিজের পরিচয় জানান দিনঃ


অনেক সময় আপনাকে না মানার কারণ হচ্ছে আপনাকে ঠিক না জানা। আপনাকে যদি অপরপক্ষ না বুঝে না জানে তবে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করবে এটাই স্বাভাবিক। তাই নিজের পরিচয় জানান দিন। আপনাকে নিজের পরিচয় জানান দিতে হবে শক্তভাবে। তবে আমি অমুক বংশের তমুক এভাবে জানান দিতে গিয়ে আঙুল তুলিয়েন না। যদি তুলে ফেলেন তো ধরে নিন নিজের সম্পর্কে অপরপক্ষকে বাজে ধারণা দিলেন। আপনার পরিচয় জানান দিবেন আপনার কাজের মাধ্যমে। আপনার বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বই জানিয়ে দিবে আপনি কে! যদি আপনার কাজ ভালো হয় সুন্দর হয় তাহলে যে কেউ আপনাকে একটু হলেও গুরত্ব দিবে।

খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসুনঃ


এত কিছুর পর ও যদি আপনি তাচ্ছিল্যের শিকার হন, লোকে আপনার সাথে অন্যায় করে নির্দ্বিধায়। তবে সমস্যা আরো গভীরে। তারা আপনার ভালোমানুষিকে আপনার দুর্বলতা ভাবে এবং এর সুযোগ নেয়। আপনার সরলতা কে তারা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির কাজে লাগায়।
কিন্তু তাদের এই ভাবনা যে ভুল তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে হবে আপনাকেই। নিজের গতানুগতিক খোলস তথা আচরণ থেকে বেরিয়ে আসুন। নিজের জন্য একটু বদলে যান। লাজুকতা পরিহার করে সাবলীল হোন। নিজের অবস্থান মজবুত করতে আবেগকে দুরে ঠেলে ভীরুতা বর্জন করুন। বাস্তবের কঠিন চাদরে নিজেকে মুড়িয়ে নিন। তবেই আপনি নিজের খোলস ফেলে আপনার আপনিকে প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন।

মোদ্দাকথাঃ


ঘি খুবই তরল পদার্থ। শুধু আঙুল ডুবিয়ে পাত্র থেকে কখনো আশানুরুপ ঘি তোলা যায় না। ঘিয়ের মতো জীবনের বাস্তবতা ও খুবই তরল। এই বাস্তবতায় সোজা হয়ে চলাফেরা করলে জীবনের ঢেউয়ে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব। তাই আঙুল বাঁকিয়ে যেভাবে পাত্র থেকে ঘি তুলতে হয় ঠিক সেভাবে জীবন চলার পথে নিজের সততাকে শক্তিতে রুপান্তর করে প্রয়োজনে কঠোর হয়ে জীবনে উন্নতির শিখরে পৌঁছাতে হয়। আর এই টিকে থাকার প্রয়োজন কিংবা বাঁচার তাগিদে আপনাকে শক্ত হতে হবে।
তবে শক্ত হতে গিয়ে সত্য ও সুন্দরের পথ থেকে বিচ্যুত হলে চলবে না।
সত্য প্রতিষ্ঠা ও সততার লালনে আপনাকে হতে হবে সাহসী। তবেই আপনি ব্যক্তি জীবনে, সমাজ জীবনে ও রাষ্ট্রীয় জীবনে নিজের গুরুত্ব তুলে দরতে পারবেন।